ঘামাচির দূরীকরণের উপায় : গরম কাল মানেই নানা রকম রোগের প্রার্দুভাব ।বিশেষ করে চর্মরোগের রোগীদের জন্য এটি একটি উপযুক্ত সময় । কারণ এই সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম র্নিগত হয় ফলে শরীরে পানির সল্পতা দেখা দেয় ।আর দেখা দেয় চর্মরোগের নানা উপসর্গ । ঘামাচি তাদের মধ্যে অন্যতম । ঘামাচি ছাড়াও নানা রকম মারাত্মক রোগের আর্বিভাব ঘটে এসময় ।তবে আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ঘামাচি ।চলুন দেখে নেয়া যাক অসহনীয় এই ঘামাচি থেকে পরিত্রাণের উপায় -----------------
ঘামাচি:গরম কালে একটি অসহ্যকর রোগের নাম হচ্চে ঘামাচি ।শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি নিঃসরিত হলে এই রোগটি দেখা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে আমরা মিলিয়ারিয়া নামে চিনি
গ্রীষ্মকালে যখন শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়ে যায় তখন দেখা যায় এই ঘামাচি বা Heat rash । ঘামাচি সাধারণত তিন রকমের হয়ে থাকে ।
১/মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা
২/মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা
৩/মিলিয়ারিয়া রুব্রা
ঘামাচি হওয়ার কারণ: স্টেপ এপিডারমাইডিস নামক এক ধরনের জীবাণু আমাদের ত্বকের ঘর্মগ্রন্থির সাথে মিশে দেহে ঘামাচির জন্ম দেয়।গরমে স্বাভাবিক ভাবেই ঘর্মগ্রন্থি গুলো বেশি পরিমাণে ঘাম নিঃসৃত হয় এবং ধুলোবালি মিশে এই গ্রন্থি গুলোর মুখ বন্ধ করে দেয় ফলে আমাদের ত্বকে থাকা মৃত কোষ গুলোর ওপর ধুলোবালি জমে থাকার কারণে এপিডারমাইডিস নামক জীবাণু খুব সহজে আক্রমণ করতে পারে এবং সেখান থেকে ঘামাচির সৃষ্টি হয় ।
ঘামাচি তে আক্রান্ত স্থান: আমাদের শরীরের বুকে ,পিঠে ফুসকুড়ির মতো ছোট ছোট র্যাশ দেখা দিলে আমরা একে ঘামাচি বলে থাকি ।কিন্তু বুক ,পিঠ ছাড়াও শরীরের আরও বিভিন্ন অংশে এই ঘামাচির ্প্রার্দুভাব দেখা দেয় -যেমন : কনুই,ঘাড়,কাঁধ , পায়ের উরু ছাড়াও শরীরে ভাজ করা বিভিন্ন অংশে।আমরা অনেকেই ঘামাচির সমস্যাকে কোনো মারাত্মক সমস্যা মনে করি না কিন্তু এই ঘামাচির কারণে চুলকানি সহ প্রদাহের সাথে সাথে শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে যায় । এছাড়া ও কখনো কখনো বমি বমি ভাব ,মাথা ব্যাথা , হিট স্ট্রোক হতে পারে ।
ঘামাচিতে উপকারি কয়েকটি টিপস : আমাদের হাতের নাগালেই এমন কিছু যাদুকরি উপাদান রয়েছে যেগুলো এই তীব্র গরমে ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে ।আসুন জেনে নেয়া যাক ------
নিমপাতা: ত্বকের যেকোন সমস্যা সমাধানের কার্যকরী ঔষুধ নিমপাতা । নিমপাতা ছাড়া মানব দেহ যেন অচল ।আমরা যেকোন রোগে এই নিমপাতার উপর নির্ভশীল । নিমপাতায় রয়েছে ্ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ঘামাচি নিরাময়ে সাহায্য করে । নিমপাতার পেস্ট লাগিয়ে ৪-৫ দিন ব্যবহার করতে পারলে ঘামাচি কে বলা যাবে টা টা বাই বাই ।
লেবুর রস: লেবুর রসে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি -ব্যাকটেরিয়াল উপাদান । যা ঘামাচি দূর করতে বেশ কার্যকরী । প্রতিদিন ৩-৪ গ্লাস লেবুর শরবত খেলে ঘামাচি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বরফ: ঘামাচির সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান বরফ । শরীরের যেসকল অংশে ঘামাচি রয়েছে সেখানে বরফ ঘষলে ঘামাচি একেবারে দূর হয়ে যাবে । সেই সাথে শরীরে এনে দেবে প্রশান্তি।
অ্যালোভেরা জেল: ঘামাচির সমস্যা দূরীকরণে অ্যালোভেরা অনেক আরামপ্রদ ।কয়েকদিন নিয়মিত শরীরে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে ঘামাচির সমস্যা দূর হয়ে যায় । জেল শুকিয়ে গে েল পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে হয়ে যায় । এটা ছাড়াও অ্যালোভেরার আরও অনেক গুণাগুণ রয়েছে ।
এছাড়াও ছোলা ,বেসন ও মধু এই তিনটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে ২০ মিনিট রাখলে ঘামাচি আস্তে আস্তে সেরে উঠবে । সেই সাথে চুলকানি ও কমে যাবে।তাছাড়া ঘামাচি দূরীকরণে আদা , শসা , মুলতানি মাটি ,তরমুজ, কাঁচা আমের ব্যবহার খুবই কার্যকরী।
- ঘামাচি প্রতিরোধে যেগুলো করণীয়:
- অনেকে ঘামাচি প্রতিরোধে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করে থাকে এতে করে আমাদের ত্বকের লোমকূপ গুলো বন্ধ হয়ে যায় । ফলে আরও মারাত্মক সমস্যার সৃ্ষ্টি হয়।
- ঘামাচি হলে কখনো নখ দিয়ে চুলকানো উচিৎ নয়।
- অতিরিক্ত খারাপ অবস্থা হলে কোনো রকম প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না প্রয়োজনে স্টেরয়েড মলম অথবা ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে হবে।
- এই গরমে সবসময় হালকা রঙের পোশাক পরিধান করতে হবে ।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
- ঘামাচি থেকে যদি পুঁজ বের হয় তাহলে দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
0 Comments