জ্বর, সর্দি ও কাশি, মুখ ও গলার রোগ, চর্মরোগ, বাতরোগ নিরাময়ে - হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

জ্বর,সর্দি ও কাশি,মুখ ও গলার রোগ ,চর্মরোগ ও বাতরোগ নিরাময়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি:

জ্বর ,সর্দি ও কাশি ,মুখ ও গলার রোগ, চর্মরোগ ও বাতরোগ নিরাময়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকরী। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে নানা ধরনের রোগের উপশম দেখা দেয়। নিচে এসব রোগ উপশমকারী ঔষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:-

হোমিও চিকিৎসা

পরিচয়: ডাল্কামারা অপর নাম বিটার সুইট বা ডালসিস-অ্যামেরা।

ব্যবহার স্থল: হাইড্রোজেনোয়েড ধাতুর ঔষুধ, অর্থাৎ যে সকল ব্যক্তি আর্দ্র ঠান্ডায় পীড়িত  হয়ে পড়ে তাদের জন্য এই  ঔষুধ বেশি কার্যকরী। শুষ্ক ঠান্ডা লাগার ফলে যেমন অ্যাকোনাইট তেমনি ভিজা ঠান্ডা লাগার ফলে কোন রোগ হলে ডাল্কামারা বেশি উপযোগী।

লক্ষণ:বর্ষাকালে ,বর্ষার ঠান্ডা বাতাস লেগে অথবা গরম বায়ু হঠাৎ পরিবর্তনের জন্য  এসব রোগের উৎপত্তি। বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লেগে,গায়ের ঘাম বসে,চর্ম রোগ চাপা পড়ে নানা রকম রোগ দেখা দেয়।গ্রীষ্মকালে দিনে গরম রাতে ঠান্ডা পড়লে সর্দির আক্রমণ। সদ্যোজাত শিশুদের সর্দি লেগে থাকে।আক্রান্ত স্থান বরফের মত ঠান্ডা। উদরাময় ও বাত পর্যায়ক্রমে হয়। ঠান্ডা লেগে গ্ল্যান্ড ফোলে যায়।চটচটে আঠার মত লালাস্রাব ,বর্ষার ঠান্ডায় চুলকানি বাড়ে,মুখের উপর নিউর‌্যালজিক ব্যথা  ইত্যাদি দেখা দেয়।

জ্বর : বর্ষাকালের জ্বর, ভিজা বিছানায় ঘুমানোর ফলে জ্বর ,ভিজা স্যাঁৎসেঁতে স্থানে থাকলে জ্বর।গ্রীষ্মকালে হঠাৎ ঠান্ডা পড়লে জ্বর। শীতের সময় ঘন ঘন প্রসাব হয়্ এবং শীতের সময় খুব পিপাসা হয় কিন্তু উত্তাপের সময় পিপাসা থাকে ,মুখ তেতোঁ হয়ে যায় ,ঠান্ডা পানির পিপাসা লাগে এবং প্রচন্ড জ্বরে প্রলাপ বকতে থাকে।

সর্দি  ও কাশি : শরৎকালীন বিশেষকরে দিনে উত্তাপ ,রাতে বেশ ঠান্ডা  এ রকম সর্দি কাশিতে ডাল্কামারা ফলপ্রদ। নাক ও চোখ থেকে জলের ন্যায় প্রচুর সর্দি বা শ্লেষ্মা ঝরতে থাকে। এ সর্দি ঠান্ডা হাওয়ায় বেশি হয় এবং আবদ্ধ গরম ঘরে ভেতরে কম থাকে। ডাল্কামারা রোগী মোটে ও স্থির থাকতে পারে না। সর্দির জন্য নাক বন্ধ হয়ে আসে।

মুখ ও গলার রোগ : ডাল্কামারায় মুখে স্নায়ুশূল আছে। স্নায়ুশূল গন্ডদেশ থেকে চোয়াল পর্যন্ত প্রসারিত হয় এবং আক্রান্ত অংশে ঠান্ডা অনুভব করে। রোগীর মার্কারি প্রভৃতির ন্যায় লালাস্রাব আছে - ডাল্কামারার লালা চটচটে,দেখতে সাবান ফেনার জলের মত; খুব লালাস্রাব থাকার সত্ত্বেও রোগীর জিহ্বা শুষ্ক ও পানির পিপাসা লাগে। যেকোন পীড়া হঠাৎ ঋতু পরিবর্তনের সাথে বেশি হয়। পারদের অপব্যবহার জনিত গলক্ষত ,লালাস্রাব ,গ্রীবার গ্রন্থি স্ফীতি ও মুখের স্নায়ুশূল প্রভৃতি যদি ঠান্ডা লাগার ফলে বৃদ্ধি পায় তাহলে ডাল্কামারার কথা ভাবা আবশ্যক ।

চর্মরোগ : ডাল্কামারায় নানা জাতীয় চর্মপীড়া  আছে। ছোট ছোট আঁচিল ও দেখা যায় । আমবাতে এটি একটি উত্তম ্ঔষুধ। ছোট ছোট শিশুদের মাথায় ও মুখের চর্মপীড়ায় এটি উপকারী। চর্মরোগ ও রাস -টক্সের চর্মরোগ প্রায় একই লক্ষণসংযুক্ত। পার্থক্য হচ্ছে ডাল্কামারা রোগী আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা চায় আর রাস টক্সের রোগী আক্রান্ত স্থানে গরম চায়। ডাল্কামারার কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়োগ ক্ষেত্র-সূতিকা জ্বর ,স্তন্যদায়িনীর দুগ্ধলোপ হওয়া , কিডনি বা বৃক্কক স্থানে প্রদাহ ,আমবাতিক পুরাইজিস প্রভৃতি।

বাতরোগ : উদরাময় ও বাত পর্যায়ক্রমে হয়। এ সময় আক্রান্ত স্থান ফোলা ,জ্বর ও উত্তাপ হয়। যন্ত্রণায় ঘুম হয় না ,ছটফট করে। রাত্রে যন্ত্রণার সঙ্গে প্রলাপ বকে। নড়াচড়ায় যন্ত্রণা কম হয় এবং হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।ডাল্কামারার ন্যায় রাস টক্সের রোগী ও যন্ত্রণায় ছটফট করে ।

শক্তি।-৩x,৬,৩০.২০০।

Post a Comment

0 Comments